মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩৮ অপরাহ্ন
বাংলা ং ও ঙ-এর উচ্চারণ একই রকম, তবে বানানের ক্ষেত্রে শব্দভেদে কখনো ং, কখনো ঙ হয়। আবার কখনো একই শব্দে দু’রকম বানানই সিদ্ধ।
যেমন: বাংলা, বাঙালি, সংগীত, বঙ্কিম
সংগীত ও সঙ্গীত দুটি বানানই সিদ্ধ।
বাংলা বানানে কোথায় ং, কোথায় ঙ হবে তা নির্দিষ্ট করে বানান রীতি তৈরি করা হয়েছে।
(i) সন্ধির ক্ষেত্রে পূর্বপদে ম এবং পরপদের প্রথমে ক বর্গের ব্যঞ্জন ধ্বনি থাকলে পূর্বপদের ম স্থলে ঙ হবে না, ং হবে।
সম + গীত-সংগীত সম + কেত-সংকেত
অহম্ + কার-অহংকার সম + গতি-সংগতি
আরো উদাহরণ-ভয়ংকর, সংকুল, কিংবদন্তি, সংকোচন, সংখ্যা, সংগ্রাম ইত্যাদি। ং-এর পরিবর্তে ঙ ব্যবহার করলে ব্যাকরণগত দিক দিয়ে খুব দোষের নয়। তবে বানানের সমতার জন্য একই প্রকার বানান ব্যবহার করা ভালো।
(ii) সন্ধির নিয়ম না থাকলে ক, খ, গ, ঘ, ক্ষ-এর আগের ং ধ্বনি ঙ হয়।
ঙ + ক-অঙ্কুর, কঙ্কাল, বঙ্কিম, লঙ্কা, নিরঙ্কুশ, চিত্রাঙ্কন, পদাঙ্ক।
ঙ + খ-অনুপুঙ্খ, বিশৃঙ্খলা, শঙ্খচিল, পুঙ্খানুপুঙ্খ, শৃঙ্খলা, উচ্ছৃঙ্খল।
ঙ + গ-অঙ্গন, সঙ্গী, সর্বাঙ্গ, অন্তরঙ্গ, বঙ্গ, অঙ্গার, প্রসঙ্গ, বিকলাঙ্গ, লুঙ্গি, অনুষঙ্গ, চতুরঙ্গ, গঙ্গা, আঙ্গিক, দাঙ্গা, ভঙ্গুর, মঙ্গল।
ঙ + ঘ-লঙ্ঘন, অলঙ্ঘনীয়, জঙ্ঘা, দুর্লঙ্ঘ।
ঙ + ক্ষ-অনাকাক্সিক্ষত, আকাক্সক্ষা, হিতাকাক্সক্ষী।
(iii) ঙ্গ কে ঙ হিসেবে লেখা হয়।
আধুনিক চলিত ভাষায় কোমল উচ্চারণের ক্ষেত্রে ঙ্গ কে শুধু ঙ হিসেবে লেখা হয়। আঙ্গুর > আঙুর, রঙ্গিন > রঙিন, নোঙ্গর > নোঙর, কাঙ্গাল > কাঙাল, বাঙ্গালি > বাঙালি, হাঙ্গর > হাঙর ইত্যাদি।
(iv) শব্দের শেষে ঙ হয় না শুধু ং হয়।
এবং, ইদানীং, ঢং, বরং, ভড়ং, ফড়িং, স্বয়ং, সুতরাং।
ব্যতিক্রম: ব্যাঙ।
(v) ং-এর পরিবর্তে কখনো ঙ হয়।
শব্দের শেষ ং থাকলে এবং তার সাথে কোনো প্রত্যয় যুক্ত হলে ং-এর পরিবর্তে ঙ হয়।
ফড়িং > ফড়িঙের, রং > রঙের, ঢং > ঢঙের ইত্যাদি।