শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

প্র : অন্ধকার যুগের সময়কাল কত ?
উ : ১২০০ সাল থেকে ১৩৫০ সাল পর্যন্ত সময়কালকে অন্ধকারযুগ বলা হয়। এ নিয়ে অবশ্য বিতর্ক আছে। অনেকেই অন্ধকার যুগকে স্বীকার করেন না।
প্র : অন্ধকার যুগ বলার কারণ কি ?
অন্ধকার যুগ বা তামস যুগ ১২০০ সাল থেকে ১৩৫০ সাল পর্যন্ত বলে অনেকে মনে করেন। তাদের ধারণা এসময় বাংলায় রাজনৈতিক অরাজকতা চলছিল যার ফলে কোন সাহিত্য সৃষ্টি হয়নি।১২০৪ সালে ইষতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার কিলজি বাংলার রাজা লক্ষণসেন কে পরাজিত করেন। তবে এাঁও ঠিক যে পরবর্তী কালে মুসলমান শাসনামলে বাংলাসাহিত্যের প্রভ’ত উন্নতি হয়েছে। এমনকি হিন্দু কবি-লেখকও মুসলসান রাজদরবারে সাহিত্য চর্চা করেছেন। কাজেই মুসলমান শাসনামল অর্থই সাহিত্যহীন সময় নয়। সেজন্যই অনেকেই এসময়কে অন্ধকার যুগ বলতে চান না। আর এ সময়ে কিছু সাহিত্য নিদর্শনও পাওয়া গেছে।
প্র : অন্ধকার যুগে কী কী রচনা পাওয়া গেছে ?
উ : প্রাকৃত ভাষায় রচিত গীতিকবিতা ‘প্রাকৃতপৈঙ্গল’ এসময় সংকলিত হয়েছিল। এছাড়া রামাই পন্ডিতের শূন্যপুরাণ এবং এর কলিমা জলাল বা নিরঞ্জনের রুষ্মা। হলায়ূধ মিশ্র রচিত শেখ শুভোদয়ার অন্তর্গত পীর-মাহাত্ম্যজ্ঞাপক বাংলা ‘আর্যা’ অথবা ‘ভাটিয়ালী রাগেন গীয়তে’ ইত্যাদি এসময়ের সাহিত্যের উদাহরণ।
প্র : শূন্যপূরাণ কী ?
উ : রামই পন্ডিত রচিত বৌদ্ধ ধর্মীয় তত্তমূলক গ্রন্থ হলো ‘শূন্যপুারণ’। গ্রন্থটি ৫১টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এর লেখক যে রামাই পন্ডিত সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। তবে ভনিতা থেকে মনে হয় এর লেখক রামাই পন্ডিত। প্রথম পাচটি অদ্যায়ে আচে সৃষ্টিতত্ত্বের বর্ণনা। বাকি অধ্যায়ে বিচিত্র প্রকার ধর্মপূজার পদ্ধতি বর্ণনা করা হয়েছে।এই গ্রন্থের কেনা নাম ছিল না। নগেন্দ্রনাথ বসু ১৩১৪ বঙ্গাব্দে এর শূন্যপুরাণ নামকরণ করেন। এটি গদ্য ও পদ্য মিলিয়ে রচিত। এজাতীয় রচনাকে চম্পক কাব্য বলে।তবে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ মনে করেন এর প্রকৃত নাম ‘ধাগমপুরাণ’। তিনি গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তাঁর মতামত দিয়েছেন। উদ্ধৃতিটি হলো-
মহাপাপী বিনাসন কর এ মুক্তাচানে
রামাই পন্ডিত কহও আগামপুরাণে
প্র : শূন্যপুরাণে রামাই পন্ডিতের কি কি ভনিতা আছে ?
উ : মোট ছয়টি ভনিতা আছে- শ্রীজুত রামই, রামাই পন্ডিত, পন্ডিত রাম,শ্রীরাম পন্ডিত, রামাঞি, দ্বিজ রামঞি।
প্র : সেক শুভোদয়া কী
উ : হলায়ূধ মিশ্র রচিত পীর মাহাত্মবাচক কাব্য সেক শুভোদয়া। এর রচনা কাল আনুমানিক ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতকের মধ্যে।তবে এটি যে হলায়ূধ মিশ্রের রচনা তাতে সন্দেহ রয়েছে। এটি গদ্য ও পদ্যে রচিত। এটিতে ২৫টি অধ্যায় রয়েছে।বাকি অংশ খন্ডিত।জাললুদ্দিন তাব্রিজি নামের এক অলৌকিক শক্তিশালী মুসলমান রাজা লক্ষণ সেনের দরবারে মজার গল্প বলে সবার কাছে বিস্ময় সৃষ্টি করেন। এই ব্যক্তিই সেক। রাজা তাকে পুরুস্কৃত ও সংবর্ধিত করেন।
প্র : রাজা বল্লাল সেন যে গ্রন্থ রচনা করেন তার নাম কি ?
উ : দানসাগর ও অদ্ভুত-সাগর (সংস্কৃত ভাষায় রচিত)।
প্র : কোন রাজার আমলে ধর্মপুজার প্রর্বতক হয় ও ধর্মমঙ্গল কাব্য লেখা হয় ?
উ : সেন রাজাদের আমলে। এসময় ধর্মপুজাকে কেন্দ্র করে শূন্যপুরাণ ও ধর্মমঙ্গল কাব্য রচিত হয়।
প্র : ধর্মপুজার প্রবর্তক কে ?
উ : রামই পন্ডিত।
প্র : ধর্মমঙ্গল কাব্যের নায়ক কে ছিলেন ?
উ : লাউসেন। তিব্বতি পুস্তকে একে লবসেন বলা হয়েছে।
প্র : ধর্মমঙ্গল কাব্যের আদি কবি হিসেবে কাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ?
উ : ময়ূরভট্ট ধর্মমঙ্গলের আদি কবি।


পোস্টটি শেয়ার করুন...

© BengaliGrammar.Com
Maintenance by BengaliGrammar.Com