মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫, ০৩:২১ পূর্বাহ্ন
বিভক্তির সংজ্ঞা: নামপদ ও ক্রিয়াপদের শেষে যে ধ্বনি বা ধ্বনি সমষ্টি যুক্ত হয় তাকে বিভক্তি বলে।
বিভক্তির প্রয়োজনীতা কী: বিভক্তির প্রধান কাজ বাক্যে শব্দের অন্বয় বা সম্পর্ক তৈরি করা এবং নতুন শব্দের অর্থের নতুন তাৎপর্য তৈরি করা। প্রকৃতি ও প্রত্যয় দ্বারা অসংলগ্ন শব্দ সৃষ্টি হয় মাত্র। বিভক্তির সাহায্যেই বাক্যে এদের পরস্পরের সংযোগ, সম্বন্ধ সুস্পষ্ট হয় এবং অর্থের পূর্ণতা পায়। যেখানে বিভক্তির অভাব হয়, সেখানে বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিরহীন শব্দগুলোর অবস্থান নির্দিষ্ট থাকে, শব্দের ক্রম (order) দ্বারা সেখানে বিভক্তির অভাব পূরণ হয়। ‘বাঘ’ ও ‘ছাগল’ দুটো শব্দ, খা একটি ধাতু। বিভক্তির পদ বাঘে। ছাগল পদে বিভক্তি নেই বা ঊহ্য আছে এবং ক্রিয়াবিভক্ত যুক্ত হয়ে খা > খায়। সব মিলে বাঘে ছাগল খায়। বা বাঘ ছাগলকে খায়।
বাক্যের কর্তায় ও কর্মে বিভক্তি থাকায় বাক্যগত ক্রম উল্টে দিলেও অর্থের বিকৃতি হয় না। যেমন ছাগল বাঘে খায়, বা ছাগলকে বাঘে খায়। তবে, কর্তায় বা কর্মে বিভক্তি না থাকলে প্রথমে কর্তা পরে কর্ম, শেষে ক্রিয়া এই ক্রম পরিবর্তন করে দিলে অর্থ উল্টে যায়। যথা- ছাগল বাঘ খায়।
বাংলায় ধাতু বা শব্দের পরে বিভক্তি যোগ না করলে অর্থ সঠিক হয় না। যেমন : বাঘ ছাগল খা। অর্থাৎ বাংলা বাক্যে বিভক্তির প্রয়োজন অনস্বীকার্য।
বাংলা বিভক্তির পরিচয়: শব্দবিভক্তি ও ক্রিয়াবিভক্তির সংজ্ঞা প্রসঙ্গে যা পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে, তাছাড়াও বিভক্তির আরো কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। বাংলা কারকে বিভক্তির ভূমিকা ব্যাপক। কারকের সাথে বিভক্তির সম্পর্ক হিসেবে বিভক্তিরসংজ্ঞা হল- যে সকল চিহ্নের সংযোগে কারক নির্দিষ্ট করা হয় তাকে বিভক্তি বলে।
বিভক্তি সাত প্রকার। একবচনেই এর ব্যবহার বেশি। তবে বহুবচনেও ব্যবহৃত হয়।
একবচন | একবচন | বহুবচন |
প্রথমা বা শূন্য | অ | রা, এর, গুলি, গুলো, সকল, সমূহ, গণ |
দ্বিতীয়া | কে, রে, এ, য় | দিগে, দিগকে, দের |
তৃতীয়া | এ, তে, এতে, দ্বারা, দিয়া, কর্তৃক | দিগের দ্বারা, দের দ্বারা, দিগে, দিগেতে |
চতুর্থী | কে, রে, এ, য়ে | দিগে, দিগকে, দেরে, দেরকে |
পঞ্চমী | হতে, থেকে, চেয়ে | দিগের হতে, দের হতে |
ষষ্ঠী | র, এর, কার, কের | দিগের, দিগেরে |
সপ্তমী | তে, এ, য়, | দিগেতে |